"যুক্তিযুদ্ধে সব্যসাচী, চেতনায় অনির্বাণ" স্লোগানকে সামনে রেখে ১৯৯২ সালে যাত্রা শুরু করে "বিতর্ক-একটি তার্কিক সংগঠন"। ত্রিশ বছর পেরিয়ে এ সংগঠন বহু কৃতি মানুষের পদচারণায় ধন্য হয়েছে। যুক্তিবাদী মনন গঠনের লড়াইয়ে সামিল হয়ে 'বিতর্ক' জগন্নাথ হলের বিতার্কিকদের মিলনক্ষেত্র তৈরি করেছে।টিভি বিতর্কে সাফল্যমণ্ডিত পদচারণা এই সংগঠনের ঐতিহ্যকে সমৃদ্ধ করেছে। শুধু জগন্নাথ হলই নয় বরং পুরো বাংলাদেশে বিতর্কের প্রচার-প্রসারে আমাদের বর্তমান ও প্রাক্তন বিতার্কিকরা কাজ করে যাচ্ছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ হলে মুক্তবুদ্ধি ও যুক্তির চর্চায় "বিতর্ক-একটি তার্কিক সংগঠন" সবসময় অবদান রাখবে।
আরো জানুন!!বিতর্কের উদ্যোগে প্রতি সপ্তাহের বুধবার সাপ্তাহিক বাংলা অধিবেশন আয়োজিত হয়। ক্লাবরুমে আয়োজিত অধিবেশনে সদস্যদের অংশগ্রহণে নিয়মিত সংসদীয় ও সনাতনী বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। বিতর্কের কৌশল ও জ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্র নিয়ে বিস্তারিত আলোচনাও সাপ্তাহিক বাংলা অধিবেশনের কার্যক্রমের অংশ।
বাংলাদেশের বিতর্ক অঙ্গনে ইংরেজি বিতর্কও গুরুত্বের সাথে চর্চিত হয়। "বিতর্ক" হলভিত্তিক ক্লাব হলেও এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই। শুরু থেকেই প্রতি শনিবার ইংরেজি বিতর্কের অধিবেশন আয়োজন করা হয়। ব্রিটিশ পার্লামেন্টারি ডিবেটসহ নানা আয়োজনে বিতার্কিকদের অংশগ্রহণ ক্লাবের পরিবেশকে জমজমাট করে তোলে।
পাঠাভ্যাস বিতার্কিকের দৈনন্দিন কর্তব্যের অংশ। তাই বিতার্কিকদের সেই অভ্যাস তৈরি ও বজায় রাখতে বিতর্ক সংগঠনকেও পাঠের আয়োজন করতে হয়। "বিতর্ক" সে দায়িত্বে কোনো অবহেলা না রেখেই সাপ্তাহিক পাঠচক্রের আয়োজন করে। রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিকসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের বইপত্র নিয়ে আলোচনা বিতার্কিকদের ঋদ্ধ করে তোলে।
"যুক্তিযুদ্ধে সব্যসাচী, চেতনায় অনির্বাণ" এই মূলমন্ত্রকে হৃদয়ে ধারণ করে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বিতর্ক - একটি তার্কিক সংগঠন কাজ করে চলেছে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ এবং আদর্শ নাগরিক তৈরীর জন্য।যুক্তির আলোয় দূর করতে চেয়েছে অসাম্যের অন্ধকার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথ হলের বৈচিত্র্যতা, বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী, আদিবাসী আবাসিক ছাত্রদের মধ্যকার ভালোবাসা, আন্তরিকতা এবং সৌহার্দ্য আমাদের সাহস দিয়েছে,ভরসা যুগিয়েছে তিনদশক।অসাম্প্রদায়িকতা এবং সৌহার্দ্যের যে তৃপ্ত অনুভূতি আমরা পাই, তা আমরা বাংলাদেশের প্রতিটি কোনায় ছড়িয়ে দিতে দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যুক্তির আলোয়,বিতর্কের মঞ্চে আমরা লড়াই করতে চাই সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, উগ্রতার বিরুদ্ধে।
তাই "সৌহার্দ্যের বটবৃক্ষ বিকশিত হোক যুক্তির পরিচর্যায়" স্লোগানকে সামনে রেখে বিতর্ক একটি তার্কিক সংগঠন ১০,১১ এবং ১২ মার্চ ২০২৩ আয়োজন করে সৌহার্দ্য বিতর্ক উৎসব ২০২৩।
বিতার্কিক অনুসন্ধান ২০২২ থেকে নির্বাচিত নবীন বিতার্কিক ও নিয়মিত বিতার্কিকদের সমন্বয়ে ৬ টি দল গঠন করা হয় '৫ম দিবাকর স্যানাল সুদীপ স্মারক অন্তঃহল বিতর্ক প্রতিযোগিতা'য়।দল গুলো ছিলো উত্তর,দক্ষিণ, পূর্ব,পশ্চিম,ঈশান ও নৈঋত।রাউন্ড রবিন পদ্ধতিতে ৫ রাউন্ড শেষে ফাইনালে উত্তীর্ণ হয় উত্তর ও ঈশান ।
'এই সংসদ মনে করে, আগামীর সংকট পরিবেশের নয়, ক্ষুধার।' এই প্রস্তাবনায় ফাইনাল বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়।ফাইনাল বিতর্কে জয়লাভ করে ঈষান।ডিবেটর অব দ্যা টুর্নামেন্ট হন অর্নব রায় পার্থ এবং ডিবেটর অব দ্যা ফাইনাল হন বিশ্বময় শর্মা প্রমিত।
"সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে যুক্তি হোক অগ্নিবাণ, কন্ঠ হোক অমোঘ"
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথ হলের বিতর্ক সংগঠন 'বিতর্ক-একটি তার্কিক সংগঠন' এর ৩০ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আমরা আয়োজন করতে চলেছি 'আন্তঃহল সম্প্রীতি বারোয়ারী বিতর্ক প্রতিযোগিতা '।আমরা বিশ্বাস করি যুক্তির আলোতেই কেটে যেতে পারে, সাম্প্রদায়িকতার জমাট অন্ধকার।
আমি যেটা চেয়েছিলাম যে হলের ছাত্ররা যুক্তিবাদী হোক এবং বিতর্ক এমন একটি মাধ্যম যে মাধ্যমে মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার সুযোগ পায় এবং আমি আজকে যে কথাটা একটু দেবার চেষ্টা করেছি, সবাই বিতর্কিক হবে না কিন্তু বিতর্ক চর্চার এই পরিবেশে সে শাণিত হবে।সবাই ভালো পারফর্মমার হবে না কিন্তু বিতর্ক চর্চা তাকে শৃঙ্খলার মধ্যে ফিরিয়ে আনবে,জীবনকে জানবে এরকম একটা ধারণার বলবো না বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে আমি এ সংগঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করি।
প্রতিষ্ঠাতা 'বিতর্ক-একটি তার্কিক সংগঠন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তথা পুরো বাংলাদেশেই বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রেখে চলেছে। এরই স্বাক্ষর রেখে জগন্নাথ হলেই প্রতিষ্ঠা হয়েছিলো,দেশের হল ভিত্তিক প্রথম বিতর্ক ক্লাব 'বিতর্ক-একটি তার্কিক সংগঠন'। বর্তমানে বিতর্ক জগতে অগ্রণী পর্যায়ে রয়েছে সংগঠনটি। বিতর্ক ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ গঠনের হাতিয়ার হয়ে উঠুক। আমি বিতর্ক-একটি তার্কিক সংগঠনের সাফল্য কামনা করছি। জগন্নাথ হল সৌহার্দ্য চর্চার পথিকৃৎ হয়ে থাকুক চিরকাল।
প্রাধ্যক্ষ, জগন্নাথ হল
সভাপতি, বিতর্ক-একটি তার্কিক সংগঠন
সাধারণ সম্পাদক, বিতর্ক-একটি তার্কিক সংগঠন